মধ্যরাত থেকে হাজারো মানুষের অপেক্ষা। কখন আসবে সাইরেন বাজানো সেই লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স। যেখানে আছে ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী মাহিয়া তাসনিমের মরদেহ। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে দগ্ধ হয় সে। তিন দিন চিকিৎসাধীন থেকে অবশেষে পরপারে পাড়ি জমায় ওই কিশোরী।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৮টায় মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার সীমান্তবর্তী জয়পুর গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মাহিয়া তাসনিমের দাফনকার্য সম্পন্ন হয়।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার কুড়ুলগাছি গ্রামের প্রয়াত ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদের মেয়ে ও মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার জয়পুর গ্রামের নজরুল ইসলামের নাতনি মাহিয়া তাসনিম। পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে নানাবাড়ির গ্রামে দাফন করা হয়। পাঁচ বছর আগে তার বাবাও ১৯ দিন আইসিইউতে থেকে পরপারে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
তাসনিমের নানা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার নাতনি ও মেয়ে দীর্ঘদিন থেকে ঢাকায় বসবাস করে আসছে। তাসনিম মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থী ছিল। স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয় সে। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রাখা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে সবাই কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে আমার নাতনি তাসনিম। আমার মেয়ে স্বামী ও সন্তান হারিয়ে পাগল হয়ে গেছে। তাসনিমের বাবার মৃত্যুর পর সন্তানকে বুকে নিয়ে বেঁচেছিল তার মা।’ এখন সে কী নিয়ে থাকবে—বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন নজরুল ইসলাম।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া মাহিয়া তাসনিমের মরদেহ শুক্রবার ভোরে তার নানাবাড়ি জয়পুর গ্রামে এসে পৌঁছায়। পরে সকাল ৮টায় জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।