বান্দরবানের লামায় ৫০ বছর বয়সী এক গৃহবধূ তার স্বামী চিত্ত রঞ্জন বড়ুয়ার বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে লামা বাজারের কুটুমবাড়ী রেস্টুরেন্ট হল রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন স্ত্রী কামনা রানী বড়ুয়া।সংবাদ সম্মেলনে কামনা রানী বড়ুয়া বলেন, তার স্বামী চিত্ত রঞ্জন বড়ুয়া (৫৫) লামা সদর ইউনিয়নের লেইংগা ঘোনা গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় একজন পিটিশন রাইটার। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কামনা রানীর ভরণপোষণ ও চিকিৎসার খরচ দিচ্ছেন না। এতে তাকে পাড়া-প্রতিবেশী ও দানশীল ব্যক্তিদের সহায়তায় চলতে হচ্ছে।কামনা রানী অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামী তার অগোচরে তার পোষা প্রায় ৮টি গরু বিক্রি করে দিয়েছেন। এই টাকা তিনি নিজের ভরণপোষণ বা চিকিৎসার জন্য ব্যবহার না করে বিভিন্ন 'অসামাজিক' খাতে খরচ করছেন।তিনি আরও জানান, এর আগে ১৭/০১/২০২৫ এবং ২৭/০৫/২০২৫ তারিখে তিনি তার স্বামীর কাছে ভরণপোষণ ও গরু বিক্রির টাকা চাইলে তাকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।সর্বশেষ, ০৫/০৭/২০২৫ তারিখে সকালে তার বাগানে গেলে তিনি স্বামীর কাছে পুনরায় ভরণপোষণ ও চিকিৎসার খরচ চান। এ সময় তার স্বামী দুর্ব্যবহার করে জানান যে তিনি কোনো টাকা দেবেন না। কামনা রানী প্রতিবাদ করলে তার স্বামী তাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি মারেন, যার ফলে তার বাম কান থেকে রক্ত ও পুঁজ বের হয় এবং বাম পাশের একটি দাঁত ভেঙে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে দুই দিন চিকিৎসা নেন।কামনা রানী জানান, মারধরের পর তিনি তার স্বামীকে চিকিৎসার জন্য বললে, তিনি বলেন, "তুই মরে যা, তোর চিকিৎসা করাবো না।" এ ছাড়া, বেশি বাড়াবাড়ি করলে তাকে প্রাণে মেরে লাশ গুম করারও হুমকি দেন তার স্বামী।
এসব ঘটনায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিচার চেয়ে ব্যর্থ হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন কামনা রানী। তিনি গত ২১ জুলাই সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, লামা, বান্দরবান পার্বত্য জেলায় তার স্বামীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ (ধারা: ৩২৩/৩২৫/৩৭৯/৫০৬(২) দন্ডবিধি) দায়ের করেছেন।