সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ঘোষিত ২০২৫ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না রাখায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে কক্সবাজারের চকরিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত করার দাবীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চকরিয়া কোর্ট বিল্ডিংয়ের সামনের সড়কে “বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এসোসিয়েশন” এর আয়োজনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপজেলার বিভিন্ন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সহস্রাধিক শিক্ষক ও অভিভাবক মানববন্ধনে অংশ নেন।
উক্ত মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা হাতে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে ‘জুলাই বিপ্লবের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘শিক্ষা অধিকার, অনুগ্রহ নয়’ এবং ‘আমার শিশুর বিচার তার মেধায় চাই’—এসব স্লোগান দিতে থাকেন।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক নুরুল আখের, সহ-সভাপতি কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান আরিফ, চকরিয়া গ্রামার স্কুলের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিয়ে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত সরাসরি সংবিধান পরিপন্থি এবং বৈষম্যের একটি ন্যক্কারজনক উদাহরণ।
তারা বলেন, কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীরাও জাতীয় শিক্ষাক্রমে পাঠ গ্রহণ করে, বছরজুড়ে প্রস্তুতি নেয়। অথচ প্রতিষ্ঠান সরকারি নয়—এই অজুহাতে তাদের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এতে প্রশ্ন উঠছে, ‘শিক্ষা কি প্রতিষ্ঠাননির্ভর, না শিক্ষার্থীর যোগ্যতা ও মেধাভিত্তিক?’
আরও জানান, সরকার যদি সত্যিই বৈষম্যবিরোধী অবস্থানে থাকে, তাহলে এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করে সকল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় তারা রাজপথে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা চালুর মাধ্যমে বৃত্তি প্রথা বন্ধ হয়ে যায়। তবে সর্বশেষ ২০২২ সালে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
দীর্ঘদিন পর ২০২৫ সালে পুনরায় বৃত্তি পরীক্ষা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর। তবে এতে অংশ নিতে পারবে কেবল সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা- এমন সিদ্ধান্তে দেশের সকল বেসরকারি প্রা. বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে।
মানববন্ধন ও মিছিল শেষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। যার অনুলিপি চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর প্রদান করেছেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।