কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের রোস্তমআলী চৌধুরী পাড়ায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের বসতঘরে হামলা তান্ডব চালিয়ে পরিবার সদস্যদের মারপিটের ঘটনায় গৃহকর্ত্রী তসলিমা খানম বাদি হয়ে করা মামলায় আদালত কতৃক তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে পরোয়ানাভুক্ত আসামিরা উল্টো শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, তাঁর স্ত্রী মামলার বাদি ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ভিজিটর তাসলিমা খানম, তাদের ছেলে ইজাজ মাহমুদ শওকিসহ পাঁচজনের নামোল্লেখ করে আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি সাজানো মামলা রুজু করে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকের পরিবার সদস্যরা।
এমনকি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর আসামি মিছবাহ উদ্দিন, জাবেদ হোসেন ইরফান ও সোহরাব হোসেন নান্নু এলাকায় বহাল তবিয়তে থেকে বাদি এবং তাঁর পরিবার সদস্যদের নানাভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। হুমকি আতঙ্কে বাদির স্বামী ও সন্তান মসজিদে নামাজ পড়তে যাবার সাহসও পাচ্ছে না। পাশাপাশি আসামিদের ইন্ধনে কতিপয় চক্র শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের পরিবারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ অবস্থায় স্বাভাবিক জীবন যাপনে প্রতিনিয়ত তটস্থ রয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার। আসামিদের নানাবিধ হুমকির মুখে আতঙ্কিত পরিবারের গৃহকর্ত্রী তসলিমা খানম গত ২৫ আগস্ট এবং তাঁর স্বামী জাহাঙ্গীর আলম সর্বশেষ গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় দুটি জিডিও করেছেন। এরপরও তাঁরা আসামিপক্ষের নানামুখী হুমকি থেকে নিস্তার পাচ্ছে না বলে চকরিয়া প্রেসক্লাবে এসে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী স্বামী স্ত্রী।
অভিযোগে লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রোস্তমআলী চৌধুরী পাড়ার মৃত মোঃ হাছেন আলীর ছেলে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার বসতঘরে হামলা চালিয়ে পরিবার সদস্যদের উপর মারপিটের ঘটনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা (৯৯৩/২৪) রুজু করেন আমার স্ত্রী তসলিমা খানম।
২০২৫ সালের ১০ আগস্ট মামলার শুনানিতে তদন্ত প্রতিবেদনে হামলার ঘটনার বিষয়টি সত্যতা পেয়ে আদালত মামলার তিন আসামি মিজবাহ উদ্দীন, জাবেদ হোসেন ইরফান ও সোহরাব হোসেন নান্নুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি এবং অপরাপর আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করে।
জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করে বলেন, মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির পর তাঁরা আমার পরিবারের উপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এর জেরধরে তাঁরা এলাকায় নানাভাবে হুমকি ধমকি দেয়। এমনকি মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আমাদেরকে হয়রানি করবে বলে হাঁকা বকা করে। এরই জেরে
পরোয়ানাভুক্ত আসামি মিজবাহ উদ্দীন বাদি হয়ে গত ২১ সেপ্টেম্বর চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে একটি সাজানো ঘটনা দেখিয়ে পাল্টা মামলা করেন।
ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর স্ত্রী তসলিমা খানম দাবি করেন, আমাদের বিরুদ্ধে করা মামলাটি একবারে অবান্তর। মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তাদের অনেকে মামলার বর্ণিত ঘটনার দিন ঢাকা এবং চট্টগ্রামে ছিল। কেউ ঘটনাস্থল থেকে তিন কিলোমিটার দুরে অবস্থান করছিলেন। আমাদের দাবি, প্রযুক্তির এইদিনে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিরপেক্ষ তদন্ত করলে ঘটনার সময় আসামিরা (আমাদের পরিবারের লোকজন) কোথাও ছিল তা সনাক্ত করা সম্ভব হবে।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ তুলেছেন, আমার বাড়িতে হামলার ঘটনায় জড়িত আসামিরা আমাদের মামলা থেকে সুকৌশলে রক্ষা পেতে কল্পকাহিনি ভিত্তিক অলিক, উদ্ভট ও বানোয়াট ঘটনা দেখিয়ে আদালতে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে সাজানো মামলাটি করেছে। এটি বাস্তবতা বিবর্জিত নাটক বটে। যাহা আইনগত ভাবে ফৌজদারি অপরাধের সামিল।
আমরা বিজ্ঞ আদালতের কাছে জড়িতদের বিরুদ্ধে এবিষয়ে সুবিচার কামনা করছি।
পাশাপাশি সাজানো ঘটনা দেখিয়ে মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এধরণের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে এলাকার সচেতন নাগরিক সমাজকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানাই এবং এব্যাপারে সত্য উদঘাটন পুর্বক প্রকৃত ঘটনা গণমাধ্যমে তুলে ধরে নিরীহ মানুষকে হয়রানি থেকে রক্ষা করতে সাংবাদিক সমাজের কাছে বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের গৃহকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর স্ত্রী তসলিমা খানম। ##