গাজা সিটিতে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর (আইওএফ) আক্রমণ প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আরও মারাত্মক অভিযান চালাচ্ছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা।হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড জানিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা গাজা সিটির জাইতুন এলাকার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর তিনটি মার্কভা ট্যাংক লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। আল-কাসসামের মতে, এই অভিযানটি জাইতুন এলাকার দক্ষিণে সালাহ আল-দিন মসজিদ ও জাইতুন ক্লিনিকের আশেপাশে চালানো হয়। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে আসা ডজনখানেক প্রতিরোধ যোদ্ধা এই অভিযানের সাফল্যের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা এক বিবৃতিতে আল-কাসসাম জানায়, এই অতর্কিত হামলায় অন্তত পাঁচজন ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর সৈন্য নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সে সময় ইসরায়েলি গণমাধ্যম এই ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর ‘সবচেয়ে জটিল ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম’ বলে বর্ণনা করে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম আরও জানায়, আহতদের মধ্যে একজন নাহাল ব্রিগেডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা সম্প্রতি উত্তর গাজার অভিযানের দায়িত্ব নিয়েছে।ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের সশস্ত্র শাখা আল-কুদস ব্রিগেড জানিয়েছে, দখলদার বাহিনীর ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চালানো সামরিক কার্যক্রমের প্রতিশোধ হিসেবে তারা ইসরায়েলি বসতি নেতিভোটে দুটি রকেট নিক্ষেপ করেছে। ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী এই হামলার কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, একটি রকেট ঠেকিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং অন্যটি একটি খোলা জায়গায় পড়েছে।
হিব্রু গণমাধ্যম জানায়, রকেট হামলার কারণে গাজা সীমান্ত এবং পশ্চিম নেগেভের কাছাকাছি এলাকায় সাইরেন বেজে ওঠে।
মার্কিন-সমর্থিত চলমান গণহত্যা এবং অবরোধ সত্ত্বেও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো সামরিক লক্ষ্যবস্তু এবং বসতিতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বলছে, এর মধ্য দিয়ে দখলদার বাহিনীর যুদ্ধের উদ্দেশ্য, বিশেষ করে প্রতিরোধ বাহিনীকে ভেঙে দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা স্পষ্টত ব্যর্থ হয়েছে।হিব্রু গণমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, দখলদার বাহিনীর রাজনৈতিক নেতারা গাজা সিটির এই অভিযানের নাম ‘গিডিয়নস চ্যারিয়টস ২’ থেকে পরিবর্তন করে নতুন নাম দেবেন, যাতে তারা এটিকে ‘একটি নতুন পদক্ষেপ’ হিসেবে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের কাছে ‘প্রচার’ করতে পারে। কারণ, এই নামটি আগের ব্যর্থ অভিযানের সঙ্গে সম্পর্কিত।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অন্তত ৪২,০১১ শিশু আহত হয়েছে, আর জাতিসংঘ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার বিষয়ক কমিটি অনুমান করেছে, ২১,০০০-এরও বেশি শিশু স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়েছে। আরও হাজার হাজার শিশু নিখোঁজ রয়েছে বা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।